ঢাকা: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সারা দেশে এক হাজার ৫৮১ জন শহীদের নাম পাওয়া গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য-বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ প্রচেষ্টায় তৈরি প্রাথমিক তালিকায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী।
স্বাস্থ্য-উপকমিটির তথ্যমতে, শহীদদের পাশাপাশি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ৩১ হাজারের বেশি ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন। তবে এই তালিকা এখনো চূড়ান্ত নয়।
নাসির উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটি এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ প্রচেষ্টায় আমরা সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ব্যক্তিদের একটি প্রাথমিক তালিকা প্রণয়ন করতে সক্ষম হয়েছি। প্রাথমিক তালিকায় মোট ১,৫৮১ জন ব্যক্তির তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশেরই বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য-উপকমিটির সদস্যরা গত এক মাস ধরে এই ১,৫৮১টি পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরাসরি গিয়ে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা হবে। পরে জাতীয় নাগরিক কমিটির ওয়েবসাইট, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন স্থানে সেই তালিকা প্রকাশ করা হবে।
স্বাস্থ্য-উপকমিটির সদস্য সচিব তারেকুল ইসলাম জানান, শহীদদের এই প্রাথমিক তালিকা যাচাই করতে প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তারা প্রতিটি পরিবারের কাছে গিয়ে তথ্যের সত্যতা পূর্ণাঙ্গ যাচাই করবেন।
নাগরিক কমিটির আইটি সেলের প্রধান ফরহাদ আলম ভূইয়া বলেন, তালিকা প্রণয়নের কাজে আমাদের সহায়তা করেছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি, রেড জুলাইসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি সংস্থা। পাশাপাশি, বিভিন্ন স্থানীয় পর্যায়ের ব্যক্তিরাও তথ্য দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেছেন, যা এই তালিকা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এর আগে বাংলানিউজকে এক সাক্ষাৎকারে স্বাস্থ্য-উপকমিটির সদস্যরা জানান, চারটি ধাপে তারা তথ্য সংগ্রহের কাজ করেছেন। প্রথমত, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত কমিটি বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের মাধ্যমে যে তথ্য সংগ্রহ করেছে, তা তারা নিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থেকে আহত ও নিহতদের তথ্য নিয়েছেন।
তৃতীয়ত, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন, রেড জুলাই ও ব্রাকের মতো যেসব প্রতিষ্ঠান চিকিৎসাসেবা ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে, তাদের থেকে হতাহতদের তালিকা তারা নিয়েছেন। চতুর্থত, এমন কিছু গ্রুপ, যারা স্বাধীনভাবে আহত ও নিহতদের নিয়ে কাজ করেছে, তাদের থেকে তথ্য নিয়েছেন।