চট্টগ্রাম ওয়াসার সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চান্দগাঁওয়ে ১৫শ’ এবং আগ্রাবাদে ১৫শ’ ওয়াসার স্মার্ট মিটার বসানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে চান্দগাঁওয়ে ৭শ’ মিটার বসানো হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক কাজী শহিদুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, আমেরিকার যে প্রতিষ্ঠানটি কাজ পেয়েছে তাদের লোকাল এজেন্ট পদ্মা স্মার্ট টেকনোলজি মিটার বসানোর কাজ করছে। যে এলাকায় স্মার্ট মিটারগুলো বসানো হচ্ছে ওই এলাকার আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের বিলের হিসাব হবে এই ডিজিটাল মিটারে। মিটার রিডারদের কারণে গ্রাহকদের ভোগান্তি কমানোর লক্ষ্যে মিটার ব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এসব মিটারে কোনো রিডার লাগবে না। হিউম্যান টাচ ছাড়াই মিটারের রিডিং অটো চলে যাবে সেন্ট্রাল সার্ভারে। এটা চালু হয়ে গেলে পানি চুরি বন্ধ হয়ে যাবে। পানির অপচয়ও কমবে। যা বিশ্বমান অনুযায়ী হবে। ২০২০ সালের শুরুর দিকে লোরা গেটওয়ে ভিত্তিক ৫টি স্মার্ট মিটার পরীক্ষামূলকভাবে বসানো হয়। নগরীর লালখানবাজার এলাকার হাইলেভেল রোড ও বাঘঘোনায় বসানো হয় এসব পরীক্ষামূলক মিটার। ব্যবহারে এসব মিটারের কার্যকারিতার সফলতা পেয়ে এই পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। মিটারগুলো বসানোর আগে পরীক্ষার জন্য বুয়েটে পাঠানো হলে বুয়েট থেকে পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে বলে জানিয়েছেন এই প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক কাজী শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রথম পর্যায়ে নগরীর চান্দগাঁও এবং আগ্রাবাদ–এই দুটি জোনে ৩ হাজার স্মার্ট মিটার বসবে। এরমধ্যে চান্দগাঁওয়ে ১৫শ’ এবং আগ্রাবাদে ১৫শ’ মিটার বসানো হবে। প্রথমে চান্দগাঁওয়ে বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত চান্দগাঁওয়ে ৭শ’ এর মত মিটার বসানো হয়েছে।
স্মার্ট মিটার বসানোর কাজটি মূলত সিস্টেম এনালিস্ট শফিকুল বাশার দেখতেন। উনি শিক্ষা ছুটিতে যাওয়ার কারণে এখন মিটার বসানোর কাজটি দেখছেন (মনিটরিং করছেন) কম্পিউটার প্রোগ্রামার লুৎফি জাহান।
চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা গেছে, একজন মিটার পরিদর্শক ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার মিটারের তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বে থাকেন। এটি আসলেই অনেক কঠিন ব্যাপার। আশা করছি, পাইলট প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে ওই এলাকায় পানির অপচয় রোধ হবে। পাশাপাশি পুরো নগরী স্মার্ট মিটারের আওতায় আনা গেলে ওয়াসার রাজস্বও বাড়বে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম ওয়াসার ৪২ জন মিটার পরিদর্শক দিয়ে প্রায় ৭৮ হাজার সংযোগের বিল তৈরি করতে হয়। এসব কারণে পানি ব্যবহারের সঠিক হিসাব না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, ওয়াসার মিটার পরিদর্শকরা রিডিং কম দেখান বা অনেক ক্ষেত্রে বেশি রিডিং দেখান। আবার টাকার বিনিময়ে অবৈধ সংযোগ দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এই অবৈধ সংযোগে ব্যবহৃত পানিকে নন–রেভিনিউ ওয়াটার হিসেবে দেখানো হয়। ডিজিটাল মিটারের মাধ্যমে বিল হিসাব করা গেলে পানির অপচয় ও অবৈধ বিক্রি রোধ করা যাবে বলে আশা করছেন ওয়াসার কর্মকর্তারা।