ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ সন্দেহে মারধর ও ধাওয়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই শিক্ষার্থী বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে দৌড়ে ইবি থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন। শনিবার (০৫ অক্টোবর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আব্দুল হাফিজ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সাদ্দাম হোসেন হলের ৩৩৩ নম্বর কক্ষে থাকেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি তার আবাসিক হলের কক্ষে যান। এসময় ক্যাম্পাসে হাফিজ নামের ছাত্রলীগ নেতা এসেছে বলে কথা ছড়িয়ে পরলে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে শিক্ষার্থীরা। পরে তার রুমের সামনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের একাংশ অবস্থান নিয়ে প্রায় এক ঘন্টা তাকে অবরুদ্ধ করে রেখে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং শিক্ষার্থীদের আরেকাংশ হল গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন।
পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কেরা তাকে নিরাপদে বের করে দিতে চাইলে হল গেটে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। সেসময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে মারধর করে জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ভীত হয়ে দৌড় দিলে শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া দেন। এসময় ভুক্তভোগী ধাওয়া খেয়ে ফুটবল মাঠ পার হয়ে ইবি থানায় আশ্রয় নেন।
পরবর্তীতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন, পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী, আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ারুল ওহাব এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইটের উপস্থিতিতে ডাইনিংয়ের বাকী টাকা পরিষদের মুচলেকা দিয়ে তিনি থানা থেকে বের হয়ে যান।
শিক্ষার্থীরা বলেছেন হাফিজ বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে প্রভাব বিস্তার করেছে, ছাত্র আন্দোলনে বিরোধিতা করেছেন এবং হলের ডাইনিং সহ বিভিন্ন দোকানে বাকি খাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সাদ্দাম হোসেন হলের ডাইনিং ম্যানেজার মাজহার বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে হাফিজ প্রায় পঁচিশ হাজার টাকার বাকী নিয়েছে।
এ বিষয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল হাফিজ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান হাফিজ সন্দেহ করে সবাই আমার ওপর চড়াও হয়। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই সবাই আমাকে মারধর করে। আমি ছাত্রলীগের কোনো পদে নেই।”
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রহমান বলেন, “এটি থানার কোনো বিষয় নয়। মারধরের শিকার শিক্ষার্থী থানায় আশ্রয় নেয়। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মীমাংসা করে চলে যান। এটা থানার কোনো ফাংশন না।”
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।