স্প্যানিশ ভাষায় প্রকাশিত হলো আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশি লেখক ও অনুবাদক আনিসুজ জামানের প্রথম উপন্যাস ‘princesa negra de dos estambres’ (Black princess of two strands)। ‘ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা ২০২৪’-কে সামনে রেখে উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে মেক্সিকোর প্রকাশনা সংস্থা ‘এদিসিওন দেল লিরিও’।
লেখক আনিসুজ জামানকে ‘সমকালীন স্প্যানিশ সাহিত্যের নতুন কণ্ঠস্বর’ উল্লেখ করে স্প্যানিশ ভাষার পত্রিকা altiempo.mx এবং cronica.com.mx লিখেছে— “এই উপন্যাসের কাব্যিক ভাষার মধ্য দিয়ে পাঠক পারিবারিক সম্পর্কের জটিলতার মধ্যে নিজেকে এবং নিজেকে অসহায়ত্বকে আবিষ্কার করবেন। উপন্যাসের চরিত্ররা মেক্সিকোতে নিজেদের পারিবারিক ঐতিহ্যের মধ্যে তাদের অস্তিত্বের ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত অন্বেষণ করে যাচ্ছে।উপন্যাসটির ভাষা প্রতীকনির্ভর হওয়ার কারণে পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে বহুকৌণিক সম্ভাবনা।”
কাশক জানান, “নারী-পুরুষ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে উপন্যাসের রাষ্ট্রের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতার দ্বন্দ্ব উঠে এসেছে। তাছাড়া শরণার্থী সমস্যা, নারীর আত্মপরিচয়ের সংকটও এই উপন্যাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ হয়ে উঠেছে।”
বাংলা ভাষায় দুটি গল্পগ্রন্থ প্রকাশের পর স্প্যানিশ ভাষায় নিজের প্রথম উপন্যাস প্রকাশ নিয়ে লেখক বলেন— “স্প্যানিশ সাহিত্যের সঙ্গে, এখানকার লেখক ও প্রকাশকদের সঙ্গে আমার পরিচিতি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। আমি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, জহির রায়হানের ‘হাজার বছর ধরে’ ও মাহমুদুল হকের ‘কালো বরফ’ স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ করেছি। বাংলা ছোটগল্পের একটা সংকলনও আমি স্প্যানিশে অনুবাদ করে প্রকাশকরেছি। এগুলো আমার প্রস্তুতিরই অংশ। স্প্যানিশ ভাষায় আর কোনো বাঙালি উপন্যাস লিখেছেন কিনা জানি না, আমার চেষ্টা ছিল বা আছে। তবে এই উপন্যাসটা কিন্তু আমি বাংলাতেই লেখা শুরু করি। একদিন সকালে ৬ষ্ঠ অধ্যায় অনেকটা লিখে আমি খেয়াল করি, অবচেতনে আমি স্প্যানিশে লিখতে শুরু করেছি। এরপর আমি আবার প্রথম থেকে স্প্যানিশে লেখা শুরু করি। উপন্যাসের সেটিংস মেক্সিকো হওয়াতে স্প্যানিশ ভাষায় লিখতে সুবিধা হয়েছে।”
প্রচ্ছদ করেছেন চিত্রশিল্পী ইসাবেল। বইটির অনুবাদের কপিরাইট বিক্রি করার জন্য চলমান ‘ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা ২০২৪’ এ প্রদর্শিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইংরেজি, জার্মানি ও চীনা ভাষায় অনুবাদের কপিরাইট বিক্রি হয়েছে বলে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছে।